সার্জারি আসলেই একটা উদ্বেগের ব্যাপার হতে পারে, বিশেষ করে যখন আপনি জেগে থেকে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন। অনেকে সচেতন সার্জারি নিয়ে ভয় ও উদ্বেগে ভোগেন - তবে নিশ্চিত থাকুন: আপনাকে শান্ত ও রিলাক্স রাখার জন্য কার্যকরী কিছু কৌশল রয়েছে। আসল কথা হল আপনার মনকে সার্জারি থেকে সরিয়ে অন্য কোনো ভালো জিনিসের দিকে নিয়ে যাওয়া। এখানে কিছু উপায় দেওয়া হল:
মননশীলতার কৌশল
চাপের মধ্যে শান্ত থাকার জন্য মননশীলতা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। মননশীলতার প্রধান কাজ হল বর্তমানে থাকা এবং কোনো বিচার ছাড়াই নিজের আবেগকে স্বীকার করা। সার্জারির সময়, আপনি আপনার শরীরের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন এবং আপনার শরীরের প্রতিটি অংশ কেমন অনুভব করছে তা বুঝতে পারেন।
উদাহরণস্বরূপ, আপনার হাত কেমন অনুভব করছে? এটা কি গরম নাকি ঠান্ডা? ভারী নাকি হালকা লাগছে? আপনার পায়ের আঙ্গুল বা কানের কথাই বা কী? এই ধরনের অনুশীলন শুধু আপনার মনোযোগ সার্জারি থেকে সরিয়ে নেবে না, সেই সাথে আপনার স্নায়ুর উপর একটি শান্ত প্রভাব ফেলবে।
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস
গভীর, মনোযোগ সহকারে শ্বাস-প্রশ্বাস আপনাকে সচেতন সার্জারির সময় শান্ত থাকতে সাহায্য করতে পারে। সাধারণ শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম আপনার হৃদস্পন্দন কমাতে এবং আতঙ্ক দূরে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
একটি জনপ্রিয় কৌশল হল বক্স ব্রিদিং: যেখানে আপনি চার পর্যন্ত গণনা করে শ্বাস নিন, চার পর্যন্ত গণনা করে ধরে রাখুন, চার পর্যন্ত গণনা করে শ্বাস ছাড়ুন এবং আবার চার পর্যন্ত গণনা করে ধরে রাখুন। এই চক্রটি বারবার করলে আপনার স্ট্রেস লেভেলের জন্য দারুণ কাজ দিতে পারে।
বিক্ষেপ
মনকে ব্যস্ত রাখার জন্য কিছু নিয়ে গেলে তা সার্জারির আগের অস্থিরতা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটা আপনার পছন্দের প্লেলিস্ট, একটি আকর্ষণীয় অডিওবুক বা মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জিং পাজল হতে পারে। আপনার মস্তিষ্ককে সার্জিক্যাল পদ্ধতির বাইরে অন্য কিছুতে ব্যস্ত রাখলে তা স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমাতে পারে।
ইতিবাচক ভিজ্যুয়ালাইজেশন
এই কৌশলটিতে আপনি নিজেকে একটি শান্ত ও সুখী জায়গায় কল্পনা করতে পারেন; এটা কোনো সমুদ্র সৈকতে শুয়ে থাকার মতো সহজ হতে পারে, যেখানে ঢেউয়ের শব্দ শোনা যায় অথবা একটি সফল অপারেশন এবং দ্রুত পুনরুদ্ধারের কল্পনা করতে পারেন। এই ইতিবাচক ধরনের চিন্তাভাবনা আপনাকে শান্ত থাকতে এবং আপনার জেগে থাকা সার্জারির সময় মন ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।
যোগাযোগ
সবশেষে, আপনার স্বাস্থ্যসেবা দলের সাথে খোলাখুলি যোগাযোগ রাখাটা জরুরি। প্রশ্ন করতে বা আপনার উদ্বেগের কথা জানাতে দ্বিধা করবেন না। কী ঘটতে চলেছে তা বুঝতে পারলে আপনার যেকোনো ভয় বা অনিশ্চয়তা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
মনে রাখবেন, এই কৌশলগুলো বেশিরভাগ মানুষের জন্য কার্যকর, তবে সবার জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে। তাই, আপনার উদ্বেগ বা ভয় নিয়ে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে আলোচনা করা জরুরি। তারা আপনাকে সচেতন সার্জারির সময় মোকাবেলার জন্য ব্যক্তিগত কৌশল বা ওষুধ দিতে পারেন।