নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, যা সাধারণত নার্সিসিজম নামে পরিচিত, এক ধরনের ব্যক্তিত্বের সমস্যা। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো চরম আত্মকেন্দ্রিকতা, অন্যের প্রতি সহানুভূতির অভাব এবং সব সময় অন্যদের থেকে প্রশংসা পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। এই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রথমে খুব সহজেই ধরা না পরার মতো আচরণ করে, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তাদের আচরণ তাদের সম্পর্ক এবং অন্যদের সাথে যোগাযোগের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এই আর্টিকেলে, আমরা এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ চিহ্নিত করব যা দেখে বোঝা যেতে পারে কারো নার্সিসিস্টিক পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার আছে কিনা।
-
অতিরিক্ত আত্ম-গরিমা: নার্সিসিস্টরা প্রায়শই তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখায়। তারা সাধারণত নিজেদের সম্পর্কে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয় এবং মনে করে তারা খুবই স্পেশাল, ইউনিক এবং তাদের মতো স্পেশাল বা উচ্চপদস্থ লোকেরাই তাদের বুঝতে পারবে বা তাদের সাথে মেলামেশা করা উচিত।
-
সবসময় প্রশংসা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা: একজন নার্সিসিস্ট সবসময় তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ পেতে চায়। তারা প্রশংসা ও স্বীকৃতির জন্য লালায়িত থাকে এবং প্রায়শই অন্যদের সাথে কথা বলার সময় সেটি পাওয়ার চেষ্টা করে।
-
সহানুভূতির অভাব: নার্সিসিস্টদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো অন্যের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে না পারা। তারা অন্যদের অনুভূতি বা সমস্যাগুলোর ব্যাপারে উদাসীন বা অনুভূতিহীন হতে পারে।
-
কৌশলী বা নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ: নার্সিসিস্টরা তাদের নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য অন্যদের ব্যবহার করে, এবং এতে অন্যদের ওপর কী প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে তাদের কোনো চিন্তা থাকে না। তারা নিজেদের কন্ট্রোল ধরে রাখার জন্য এবং নিজেদের আত্মসম্মান বাঁচানোর জন্য চারপাশে থাকা মানুষদের ম্যানিপুলেট করে।
-
অধিকারবোধ: নার্সিসিস্টরা মনে করে তারা স্পেশাল ট্রিটমেন্ট পাওয়ার যোগ্য এবং আশা করে যে সবাই তাদের সব চাহিদা ও চাওয়া পূরণ করবে। তারা যখন তাদের প্রত্যাশিত স্পেশাল ট্রিটমেন্ট পায় না, তখন অধৈর্য হয়ে যায় বা রেগে যায়।
-
অহংকার ও পৃষ্ঠপোষকপূর্ণ মনোভাব: একজন নার্সিসিস্টকে প্রায়শই দাম্ভিক, বড়াই করা বা ভান করা মনে হয় এবং তারা যাদের নিজেদের থেকে inferior মনে করে, তাদের ছোট করে দেখে।
-
অন্যের প্রয়োজনের প্রতি সংবেদনশীলতার অভাব: তারা যেমন সম্মান ও মনোযোগ দাবি করে, তেমনই নার্সিসিস্টরা অন্যের প্রয়োজন বা অনুভূতির দিকে কোনো খেয়াল রাখে না।
-
সম্পর্ক বজায় রাখতে সমস্যা: একজন নার্সিসিস্টের জন্য সম্পর্কগুলো প্রায়শই খারাপ হয় এবং আবেগ, আন্তরিকতা বা পারস্পরিক আনন্দের অভাব দেখা যায়। তারা প্রায়শই কোনো অনুশোচনা ছাড়াই সম্পর্কগুলোকে ব্যবহার করে।
এই লক্ষণগুলো একজন সম্ভাব্য নার্সিসিস্টকে শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে। মনে রাখবেন, প্রতিটি মানুষই আলাদা এবং এই বৈশিষ্ট্যগুলো ভিন্ন মাত্রায় দেখা যেতে পারে। যদি আপনি সন্দেহ করেন যে আপনার পরিচিত কেউ নার্সিসিস্ট, তবে তার সাথে একটা দূরত্ব বজায় রাখুন এবং একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।